সারসংক্ষেপ
উদ্যোক্তাদের টিউলিপ চাষ বিষয়ক দক্ষতা
বাংলাদেশের সর্ব উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ের তেতুলিয়াতে বাণিজ্যিকভাবে টিউলিপ ফুল চাষ সম্প্রসারণ ও উদ্যোক্তাদের জীবন মান উন্নয়নের লক্ষে ইকো-সোশ্যাল ডেভলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (ইএসডিও) এর মাধ্যমে বাস্তবায়িত টিউলিপ ফুল চাষের উপযোগিতা নির্নয় ও ভ্যালু চেইন প্রকল্পের অন্যতম একটি উদ্দেশ্য ছিলো টিউলিপ চাষ বিষয়ক দক্ষতা বৃদ্ধি। মূল্যায়ন গবেষণায় প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী দেখা যায় ইএসডিও বিভিন্ন প্রশিক্ষণ বা কর্মশালার আয়োজন করেছে। যেমন, জমি নির্বাচন, মাটি ও বেড প্রস্তুত করণ, স্যার ও বালাইনাশক প্রদান, প্রতিকুল আবহাওয়ায় ক্ষতি রোধ, ফুল সংগ্রহ ও প্রক্রিয়াজাত করণ ইত্যাদি। প্রত্যেক চাষীই এই প্রশিক্ষণ গুলোতে অংশগ্রহণ করেছে। উত্তরদাতাদের মতে এই ধরণের প্রশিক্ষণ তাদের জন্য খুবই দরকারি ছিলো। সেশন গুলোতে অংশগ্রহণের মাধ্যমে তারা মাটি প্রস্তুত থেকে শুরু করে প্রক্রিয়াজাত করণ সহ টিউলিপ ফুল চাষের যাবতীয় দক্ষতা অর্জন করেছে।
উৎপাদন ও বাজার ব্যবস্থাপনা
উৎপাদন, বিপণন ও বাজার ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন সাধন করা এই প্রকল্পের অন্যতম একটি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্য ছিলো। প্রক্রিয়াজাতকরণ সহ বাজার নির্বাচন ও তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ ইত্যাদি ছিলো এই লক্ষ অর্জনের জন্য গৃহীত প্রদক্ষেপ। উদ্যোক্তাদের সাথে কথা বলে জানা যায় যে, সফল ভাবে লাভ জনক উৎপাদনের লক্ষমাত্রা পূরণ ও উৎপাদিত ফুল গুলো সঠিক দামে বাজারে বিক্রির ব্যবস্থা সহ বিপণনের সকল ক্ষেত্রে সব সময় সহযোগিতা করেছে ইএসডিও। পাইকারদের সাথে যোগাযোগ ও কর্মশালার আয়োজন করা হয়েছিলো আমাদের বিপণন ও বাজার উন্নয়নের দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য।
টিউলিপ কেন্দ্রীক এগ্রো ট্যুরিজম বিকাশে পর্যটকদের জন্য ভৌত সুবিধাদির অবস্থা
বাংলাদেশের সর্ব উত্তরের উপজেলা তেতুলিয়া ভ্রমণ পিপাসুদের কাছে অন্যতম একটি আগ্রহের স্থান। তবে পর্যটক বা দর্শনার্থীদের আরাম ও সুবিধার্থে কিছু ভৌত অবকাঠামোর উন্নয়ন আবশ্যক। উদ্যোক্তারা জানায় দর্শনার্থীদের জন্য পর্যাপ্ত সুযোগ সুবিধার ব্যবস্থা ছিলো না। তাদের দেয়া তথ্য মতে কিছু ভৌত সুযোগ সুবিধার উন্নয়ন জরুরি। যেমন, রাত্রি যাপন ও আরাম করার জন্য আবাসন ব্যবস্থা, রেস্টুরেন্ট, নিরাপদ খাবার পানি ইত্যাদি। টিউলিপ চাষীরা নিজ উদ্যোগে স্বল্প পরিসরে বসার ব্যবস্থা এবং খাবার পানির ব্যবিস্থা করেছিলো, যা ছিলো অপর্যাপ্ত।
পুষ্টি, আয় বৃদ্ধি ও নারীর পারিবারিক এবং সামাজিক অবস্থান
খুবই অল্প সময়ের মধ্যে টিউলিপ ফুল উত্তোলনের সুযোগ থাকায় উদ্যোক্তাদের আর্থিক অবস্থা এবং পুষ্টি ও স্বাস্থ্যগত দিকের অনেক পরিবর্তন হয়েছে। বাড়তি উপার্জনের সুযোগ পাওয়ায় তারা নিজেদেরকে এখন আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী মনে করে। তারা পুর্বের তুলনায় এখন বেশি পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করে। অতিরিক্ত আয় দ্বারা তারা মাছ, মাংস সহ অন্যান্য আমিষ ও পুষ্টিকর খাবার ক্রয়ের সামর্থ অর্জিত হয়েছে। এছাড়া দৈনন্দিন খাবারের পাশাপাশি বিভিন্ন ফলমূল যেমন আম, কলা, পেয়ারা, কাঁঠাল, লিচু, মিষ্টি আলু গ্রহণ করে যা তাদের পুষ্টি চাহিদা পূরণ করে। বিশেষ করে নারীদের হাতে টাকা থাকায় সে তার প্রয়োজন ও পছন্দ মাফিক খাবার ও পোশাক পরিচ্ছদ ক্রয় করতে পারে। যার ফলে তাদের জীবনের সার্বিক ইতিবাচক পরিবর্তন লক্ষণীয়।
কর্মকর্তাদের প্রকল্প বিষয়ক প্রশিক্ষণ ও দক্ষতা উন্নয়ন
প্রকপ্লের সাথে জড়িত কর্মকর্তাগন যথেষ্ট দক্ষতার সাথে প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছেন। উদ্যোক্তাদের টিউলিপ চাষে দক্ষতা উন্নয়নের পাশাপাশি নিজেদেরকেও সংশ্লিষ্ট বিষয়ে দক্ষ ও অভিজ্ঞ কর্মী হিসেবে প্রমান করার প্রয়াস পেয়েছেন। (বিস্তারিত তথ্যের জন্য বিআরআইডি হেড অফিসে যোগাযোগ করতে পারেন)